Sunday, April 28, 2024
Homeবরিশাল বিভাগপটুয়াখালী জেলাবাউফলে ফুফুর সরলতার সুযোগে জমি লিখে নিল ভাতিজা

বাউফলে ফুফুর সরলতার সুযোগে জমি লিখে নিল ভাতিজা

দুলাল হোসেন- পটুয়াখালি জেলা প্রতিনিধিঃ
বয়স্ক ভাতার তালিকায় নাম দেওয়ার কথা বলে ৭৫ বছর বয়সি বৃদ্ধা ফুফুকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যান মামাতো ভাইয়ের তিন ছেলে। সুকৌশলে প্রতারণা করে ১৪.২৯ শতাংশ জমি লিখে নেন তারা। জমি লিখে নেওয়ার কথা ছেলে-মেয়ের কাছে গোপন রাখার জন্য ওই বৃদ্ধাকে দেওয়া হয় নগদ ২৫ হাজার টাকা।

সম্প্রতি প্রতারণার মাধ্যমে জমি দলিল করে নিয়ে যাওয়ার কথা জানাজানি হলে ওই বৃদ্ধা ও তারা ছেলে মেয়েরা জমি ফেরতের অনুরোধ করলেও শুনছেন না প্রতারক শহিদুল ইসলাম, মোঃ মোসলেম ও মোঃ মামুন হোসেন। উপায় না পেয়ে বৃহস্পতিবার ৯ই মার্চ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী বৃদ্ধা।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামের এ ঘটনায় এলাকা বাসীর মধ্যে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী ৭৫ বছর বয়সী রশনা বেগম ওই গ্রামের মৃত মোসলেম ফকিরের স্ত্রী।

রশনা বেগম বলেন- আমার মামাতো ভাই ফজলে আলী হাওলাদারের ছেলে শহিদ, মোসলেম ও আরেক মামাতো ভাই সিদ্দিক হাওলাদারের ছেলে মোঃ মামুন হোসেন আমাকে বয়স্ক ভাতার তালিকায় নাম দেওয়ার কথা বলে সম্প্রতি বাউফলে একটি অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে একটা কাগজে টিপ সই দিতে বলে। আমি না বুঝে টিপসই দেই। পরে তারা আমাকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে এ কথা কাউকে বলতে নিষেধ করে।

বৃদ্ধার ছেলে মোঃ হুমায়ন কবির(৪৫) বলেন- আমার মা অত্যন্ত সহজ সরল মানুষ। তাকে বয়স্ক ভাতার তালিকায় নাম দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে বাউফল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে শহিদুল ইসলাম, মোসলেম ও মামুন প্রত্যেকে ৪.৭৬ শতাংশ করে মোট ১৪.২৯ শতাংশ জমি দলিল করে লিখে নিয়ে যায়। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৪ লাখ টাকা।

এ বিষয় আমাদের না বলতে তাকে (বৃদ্ধা রশনা বেগম) ভয়ভীতি দেখানো হয়। প্রায় আড়াই মাস ধরে বিষয়টি গোপন থাকে। কয়েক দিন আগে লোকমুখে বিষয়টি জানতে পারি।

এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন- স্থানীয়ভাবে বসে এটার একটা সমাধান করা হবে। গত রবিবার স্থানীয় মান্যগণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তারা ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিবেন বলে স্বীকার করেন। কিন্তু দুইদিন পার হলেও তারা টাকা দেয়নি।

টাকা চাইলে তারা বলেন- কোনো টাকা দেওয়া হবে না। জমি তারা কিনে নিয়েছেন। বয়স্কভাতার নাম দেওয়ার কথা বলে জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোঃ শহিদুল ইসলাম, মোঃ মোসলেম ও মামুন হোসেন বলেন- এসব অভিযোগ মিথ্যা। রশনা বেগম স্ব- ইচ্ছায় আমাদের জমি লিখে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে কেশবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন পিকু বলেন- উভয় পক্ষ নিয়ে বসে মিংমাসা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বাউফলের সাব রেজিস্ট্রার হাফিজা হাকিম রুমা বলেন- প্রতিটি দলিল রেজিস্ট্রি করার আগে আমি জমি দাতার কাছে একাধিক বার জানতে চাই তিনি স্ব-ইচ্ছায় জমি দিচ্ছেন কিনা। সব জেনে শুনেই জমি রেজিস্ট্রি হয়। এমন ঘটনা ঘটার কথা নয়। তারপরেও যদি প্রতারণার ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে দলিল বাতিলের জন্য ভুক্তোভোগী আদালতে মামলা করতে পারেন। বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন, এবিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments